Category: কবিতা


মৃত পবিত্র

 

দিন কেটে যায়, জীবন এঁকে যায়,

যাক না বয়ে সে অলীক বাষ্পের ধারা।

ছুঁড়ে দেই সুখ অথবা কোনো ভোগ,

ঠিক যেন ক্ষুধার্ত কুকুরকে ছুঁড়ে দেয়া বাসি রুটি।

ঠিক তেমনই ছুঁড়ে যেন দিয়েছিলেন ঈশ্বর আমাদের,

যেমনটি ছুঁড়েছিলাম রুটি।

 

কিংবা লোভে যেন খেলেছিলাম জুয়া,

যেমনটি খেলেছে ঈশ্বর সকলকে নিয়ে প্রতি নিয়ত।

রক্ত ছাড়া আর কি বা বইবে,

ঈশ্বর, তোমার যে চোখে শুধু পাথরের দৃষ্টি।

তবু তোমার ঘরে আছড়ে পড়ে সকলের মন.

ঘরের কত রূপ তোমার?

মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা? নাকি অন্যকিছু?

 

একবার করে দেখো মন আমাদের মতো!

চিৎকার ছাড়া আর কিছুই পারবেনা।

মাটি থেকে যখন বানিয়েছিলে,

মনটাও ছিল আমাদের মাটি।

কিন্তু আজ তোমার পাথর চোখে তাকিয়ে,

আমরাও হয়েছি পাথর হৃদের অধিকারী।

 

নদীর রুক্ষতায় যেন পাই তোমার নিঃশ্বাস,

নীচ হতে নীচতর সে স্রোতের মতই যেন গভীর।

আরও কি গভীরতার প্রয়োজন তোমার?

আমাদের ব্যথার সাগর যে আরও গভীর ঈশ্বর।

তুমি কি চাও সেখানে করতে স্নান?

তুমি থাকো ঠিক তোমারই ন্যায়।

ঘুমাও তুমি, ঘুমাতে দাও আমাদের।

আর আমার কিছুই বলবার নেই।

 

তোমার কথা সব নক্ষত্রে লিখিত হবে,

একটি ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত হৃদয় দিয়ে।

ঘুমাও তুমি, তুমি ঘুমাও……………..

 

 

আমি জন্ম নেবার প্রথম যখন ডাক শুনেছিস তুই,

বলনা আমায় একটি বার কোথায় এখন তুই?

ছোট্ট হলে বলতো কেউ ওই আকাশের তারা,

যখন কেউ নেয় যে বিদায়, তারা হয় ওরা।

আমি তো আর ছোট্ট নই, নই যে আমি খোকা,

তবু কেন লুকিয়ে থেকে আমায় করিস বোকা।

তোকে খুঁজি প্রতি বেলায় শুকনো আমার চোখে,

মা তুই ডাকিসনা যে, চেপে রাখ না আমায় তোর বুকে।

 

সাঁঝ প্রহরে ফিরি আমি আর তোর মুখ মুখটি ভাবি,

খুব করে যে খুঁজে ফিরি তোর ভালবাসার চাবি।

মমতার সেই সিন্দুকটি মরচে হয়ে কোণে,

রাত প্রহরেও দেয়ালগুলো আমার মা ডাকটি শোনে।

মা তুই আয় না এবার, একবার বল, খাইয়ে দিবি তুই,

মুখটি মুছে আমি এবার তোর কোলেতে শুই।

ডাকিস না তো আদর করে, কোথায় তুই থাকিস,

মা তুই অচেনা দেশেও থেকে কি আমায় ভালবাসিস?

 

তোর ছেলেটি নেই যে আর আগের মতো পাজি,

তুই একবার ডাক, তোর ছেলে যে মরতেও শত রাজি।

সবাই ভাবে তোর ছেলেটি রাজা কিবা রাজন,

আমি যে মা তোর সেই ছেলেটি, আমি তোর মোহন।

পারিস শুধু দূর হতে চুপটি করে দেখতে,

যাবিই যদি নিয়ে যেতি, পারতাম তোকে দেখতে।

মা তুই জানিস আমি কত ভাল একবার যদি আসতি,

লক্ষী হয়ে মা ডাকতাম অশ্রু চোখে দেখতি।

 

পেটের ক্ষুধা মেটে তবু মনের মেটেনা,

হৃদয়ের ক্ষরণে মাগো ব্যথা সয়না।

তুই বকিস আমায়, রাগিস অনেক, তবু একবার তো আয়,

মা তুই কপালে চুমোস, জড়িয়ে ধরিস, ছাড়িসনা আমায়।

কিভাবে থাকিস একলা একা, কষ্ট লাগেনা,

সব অশ্রু ঝড়ে পড়েও অশ্রু শুকোয়না।

 

জ্বরের বেলায় কাঁপিরে মা, তোর নামটি ডাকি,

তবু তোর হয়না মায়া, দিয়ে গিয়েছিস ফাঁকি।

বুকের ভেতর ব্যথা জাগে, কপালে নেই যে হাত,

মা তুই আছিস কোথায়, কেমন আছিস ভেবে কাটাই রাত।

আজ যদি মা থাকতি তুই, পাশে থাকতি বসে,

বলতি তখন ভুল আমারই, জ্বর যে আমার দোষে।

 

শুনিসরে মা, ডাকি আমি, আয় না আমার বুকে,

তবু কেন চুপটি থাকিস, হৃদয় শুষে জোঁকে।

রূপোর নুপুর আমি তোর দেবো সোনায় মুড়িয়ে,

ছোট্ট মেয়ে হয়ে তুই দেখাবি সেটা ঘুরিয়ে।

আগলে রবি তুই আমারই এই বিশাল বুকে,

পালাবি না, আটকে দেবো, আমার দুই চোখে।

চোখের কড়া ভেঙে তুই গেলি কখন পালিয়ে,

মা তুই পালাবি যখন কেন দিলি হৃদয়টা আমার গলিয়ে?

 

মা তোর মোহন ডাকে, একলা রাতে বসে,

তোর তো ব্যথা হয়না আর রাত কি দিবসে।

আর সয়না ব্যথারে মা, একবার শুধু আয়,

একলা কেন থাকবিরে তুই, নিয়ে যা এই আমায়।

মা তুই বড্ড বোকা, তাই না হলে এমন কেউ করে,

কতবার ডাকি তোকে, কত যে গানের সুরে।

মা, তোর মোহন ডাকে,

ও মা, তোর মোহন ডাকে………………

 

 

কিছু আলো কখনও অন্ধকারকে বাঁধা দিতে পারেনা,

কিছু আলো কখনও অন্ধকারকে অতিক্রম করতে পারেনা।

কিছু গান কখনও কবিতায় লেখা হয়না,

কিছু কবিতা কখনও গান হতে পারেনা।

মাথা নুয়ে আসে, আমরা কতক ক্লান্ত পথহারা যেন,

পথ হারিয়েও আমরা স্রষ্টার দেখা পাই না।

 

সূর্যের আলো নেভেনা,

আগুনের তাপ কমে আসেনা।

কিছু আগুন যেন সূর্যের তাপকেও হারায়,

কিছু রৌদ্র আগুনকেও স্তিমিত করতে জানেনা।

আমাদের ভেতরের আগুনে চলে চালিকা শক্তি,

আগুনের মতো হালকাতে যেন গর্ভায় অভিশাপ।

কিছু অভিশাপ আগুনের তাপ সহ্য করতে পারেনা,

কিছু অভিশাপ যুদ্ধ হতে শান্তিতে পরিণত যে হয়না।

 

পাহাড়ের অহম যেন তার চুড়োতে,

কবরের অহম যেন তার ফলকে।

খাদ্যের অহংকার ক্ষুধাতে,

আর ক্ষুধার অহংকার দারিদ্রতাতে।

কিছু ক্ষুধা যেন খাদ্যে পরিপূর্ণ হয়না,

কিছু খাদ্য শুধু দারিদ্রতাকে মেটাতে পারেনা।

ভালবাসায় ফিরি আমি পূর্ণাঙ্গ রূপে,

আমায় যেন প্রেরিত সেই ভালবাসায় ফিরিয়ে নিতে।

নতুন করে ভাবি,

নতুন করে ভাবতে শিখি।

কিছু ভাবনা ভালবাসাকে ফেরাতে পারেনা,

কিছু ভালবাসা শুধু ভাবনায় রঙিন হয়না।

 

ভালবাসায় সাদা রঙে আঁকি ছবি,

আকাশের ক্যানভাসে এক মৌন যুদ্ধের ছায়া।

সেই ছায়াতেই উড়ে যায় সাদা কোন পাখি,

যুদ্ধ শেষে কেউ শুনতে কি পায় সেই পাখির ডাক?

আঁধার, শুধুই আঁধার।

কিছু যুদ্ধ কখনও ভালবাসাকে হারাতে পারেনা,

কিছু ভালবাসা কখনও যুদ্ধকে জয়ী হতে দেয়না।

কিছু আলো কখনও অন্ধকারকে বাঁধা দিতে পারেনা,

কিছু আলো কখনও অন্ধকারকে অতিক্রম করতে পারেনা।

আর কিছু অন্ধকার কখনও আলো হতে পারেনা।

 

[  ২০০২ সালে এই কবিতাটি লিখে ছিলাম ডায়রির পাতায়। আজই প্রথম শেয়ার করলাম সকলের সাথে। তখন বয়স কম ছিলো, তাই হয়তো কবিতাটিও তেমন একটা পরিপক্ক নয় ]

চাঁদ ডুবে তার চোখের কোণে,

মন মাতানো সে কদম বনে।

কদম ফুলের আভাসে হরন,

যায় হেঁটে দুই পাগলা চরণ।

চরণদাসের মন হরনে চোখের কোণে অশ্রু আসে,

বাঁশবাগানের পুকুরে যে তারার সাথে জোছনা ভাসে।

 

চাঁদ ডুবে তার চোখের কোণে,

সেথায় হারাই ভাঙ্গা স্বপনে।

স্বপন ভাঙ্গে আর ভাঙ্গে ঘোর,

পাখির ডাকের ঝাপটানিতে আর জাগে ভোর।

ভোরের রেখা ফুটবে কখন,

কাঁজল মায়া চোখ খুলবে যখন।

সেই চোখেতে আলোক ছটায়,

লক্ষ তারার ঝলক  হটায়।

আমি ডুবি কোন সাগরে,

ডুবতে থাকি তৃষ্ণা ভরে।

 

ক্ষুধ পিপাসা সব ভুলে যাই,

কাঁজল চোখের মনে দেখা পাই।

চোখ ছিল তার সাগর কণা,

প্রেমে হারালো অবুঝ মনা।

সূর্য ডুবে, ডুবে পাখি,

তবু ডুবে না সে কাঁজল আঁখি।

 

জোছনা খোলে পাখা মেলে,

ঠান্ডা হাওয়ায় চাঁদ যে দোলে।

হারানো মনে যে চিত্র আঁকা,

মুছে দিয়ে আঁকে কাঁজলরেখা।

আমি হারাই কোন সে বনে,

তবু খুঁজি আমায় প্রতি ক্ষণে।

কোথায় চাঁদ, কোন বা সনে,

চাঁদ ডুবে তার চোখের কোণে।

স্মৃতির নেশা

বিনিদ্র রজনীতে বিনিদ্র মন,

বারান্দায় দাঁড়িয়ে খোলা হৃদয়ের খেঁড়োখাতা,

টি-টেবিলে রাখা গরম কফির মগ হতে উড়ে আসা কড়া ঘ্রাণ,

আর সাথে কালো হয়ে আসা মেঘের গর্জন।

 

সবকিছু আঁধারে ছেয়ে যায়,

তবু মন উজ্জ্বল কোনো স্মৃতির পাতায়।

সেথায় উড়ছিল তোমার স্কার্ফ তীব্র হিমেল হাওয়ায়।

আমি শুধু দেখছিলাম বাতাসের সেই ছেলেখেলা,

আর ছিল হাতে তোমার হাত।

তখনও ঠিক হারাইনি কেন তোমার দু’চোখে?

ভয় ছিল, স্মৃতির বুকেই স্মৃতিকে বিনাশের ভয়।

 

আরও ভেসে আসে স্মৃতির চির উজ্জ্বল দৃশ্যে,

পাহাড়ের সেই দুর্গম দূর্গেতে একাকী, নিঃসঙ্গতায়,

তোমার সাথে আমার প্রথম একাকী কথা বলা,

কত কিছু বলা, কত বেদনার মেঘ উড়ানো।

তুমি সব এক ঝড়েই ভাসিয়ে দিলে,

ভালবাসার বর্ষাতেই আমায় সিক্ত করলে।

স্বর্ণরাঙা আলোতে আমার মন যেন রাঙালে।

সাগরনীল নয়নের স্রোতে আমায় যেন ভাসালে।

 

মেঘের গর্জন ঘন হতে থাকে,

কফির মগ হতে আর ধোঁয়া উড়েনা।

স্মৃতির পাতায় আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

কলম থেমে থাকে ডায়রির মাঝ পাতায়……….

 

 

দু’নয়নের প্রতীক্ষা

বারে বারে তোমায় নিয়ে লিখতে যেয়ে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ি।

আবারও বসে পড়ি লিখতে শুধু তোমায় নিয়ে।

অতীতকে ছুঁড়ে দিলাম যখন, তখনই কেন বিদায় নিলে?

বিদায় নিতেই যদি এসেছিলে তবে কেন জীবনে জড়ালে?

 

আজ কি তুমি এখনও আকঁছো ছবি কোনো এক পাথরে বসে?

অথবা লিখছো কি চিঠি?

আমি আজও তোমার চিঠির অপেক্ষাতেই থাকি সেটা কি জানো?

মেঘলা হাওয়ায় উড়িয়ে নেয়, রক্তাক্ত হৃদয় নিংড়ে পড়ে,

তবু আমি ছুটে যাই প্রথম পাওয়া সেই চিঠির এলোমেলো পাতার দিকে।

 

তবু সুখে থেকো, সাগর নীল দু’চোখের অশ্রুতে রাঙিও না মন।

সব অশ্রুর রং এঁকে যাক আমার মনের ক্ষত-বিক্ষত পংক্তিতে।

বরফের শুভ্রতায় তোমার পায়ের ছাপ কি পড়ে এখনও?

ছোট ছোট পাহাড়ের বাঁকে হারাও কি তুমি কখনও?

মনে আছে কি সেই প্রথম সন্ধ্যা?

চোখে ভাসে কি সেই প্রথম দেখা? প্রথম অনুভব?

আবারও প্রশ্ন করি তোমাকে?

কে তুমি?

কেন এসেছিলে এই দগ্ধ, অন্ধকার জীবনে?

 

সবুজের মাঝে আমি আর কাউকে যে পাই না।

প্রজাপতি যে বসে না তোমার সেই হাতে।

আমি আজও রাত জেগে থাকি, অপেক্ষায়।

যদি বা এসে আমায় না পাও, তারই অপেক্ষায়।

 

আমি আছি, এখানেই বসে আছি।

তোমার অপেক্ষাতেই আছি।

রাজকুমারী, তুমি জেগে উঠলে আমাকেই পাবে যে পাশে।

তাই আমি আছি।

দূরে কোথাও এক জীবন সন্ধিক্ষণেই আছি।

 

 

অচেনা

যখন কুয়াশাচ্ছন্ন আমি, আমায় দেখবে কি ?

যখন আমি অন্ধকার আড়ালের মাঝে,

আমায় খুঁজে পাবে কি?

 

বালু ঝড়ের মাঝে আমি হারিয়ে যাই,

সেই ঘূর্ণি প্রলয় যে গ্রাস করে আমায়।

আমি পথ হারাই, আবার পথ পেয়ে যাই।

কিন্তু আমি যে পথহারা নই, মনহারা পথিক।

মনকে হারিয়ে আর খুঁজে চলিনা,

অতীতের গর্ভে সে মন চলে যায় কোন আবর্তে,

তখন আমি অচেনা, অনেক অচেনা।

 

যখন আমায় পাবে খুঁজে,

তখন কি রবো আমি সেই মানুষ?

মনহারা পথিককে কি মানুষ বলা চলে?

কালোর মাঝে যে হচ্ছে সবই কালো,

অন্ধকারের মাঝে শুধুই অন্ধকার।

আমি যে আজ সেই কালো অন্ধকারের রূপ,

আজ সেই জগতেই বসে রই প্রতিক্ষণে নি:শ্চুপ।

 

চিনবে কি করে তখন আমায় ?

 

পর্দার আড়ালে যে, তাকে চিনতে যেওনা,

মুখোশ খুলে পড়বে যখন তখন ভয় পেওনা।

ভয়ংকর কিছু দেখবে যখন তখন থমকে যেওনা,

কঠিন এই দৃশ্য দেখে কখনও দূরে ঠেলে দিও না।

 

 

হয়তো আমি

হয়তো আমি দারুণ বোকা

যাই গুটিয়ে দিলেই টোকা

হয়তো আমার শব্দগুলো

ভীষণ রকম অগোছালো

হয়তো আমার মৌন থাকা

নিঃসঙ্গতায় কাব্য লেখা

সময়গুলো নিচ্ছে ছুটি

মনের তলে হাজার ত্রুটি

 

হয়তো আমি অবুঝ অতি

যাচ্ছি পুড়ে হচ্ছে ক্ষতি

হয়তো আমার উহ্য কথা

হয় নি বলা, অটুট প্রথা

সবার মতো সবাই থাকে

আপন চোখে আস্থা রাখে

আমার চোখে জ্বলছে তপন

শূন্য স্বপন করছি বপন

 

সোনার কাঠি রূপার কাঠি

সবুজদ্রোহে জাগবে মাটি

আমায় তবু সঙ্গে নিও

দু’হাত ভরে অস্ত্র দিও

.

খুনের নেশা স্বত্ব আমার

মুক্ত আকাশ রইবে তোমার!

যদি মিলে যায়

কান পেতে শোনো সময়ের বিলাপ

জ্যামিতিক মাত্রায় বিবর্ধন হলে

নষ্ট ইতিহাস উঠে আসে নখের দর্পণে

নিভন্ত প্রদীপের তলে খেলা করে

একালের মেকি নাক্ষত্রিক অন্ধকার

ইকারুস-ডানায় উড়ে যেতে যেতে

ভুল স্বপ্নের গলন্ত বিচরণ, নিভৃতে

আদিম চেতনার বুকে সুতীক্ষ্ণ রক্তক্ষরণ

কাঁটাতারে ঝুলে থাকে সুবিচার

শেকলভাঙ্গার গান আর গায় না

জীর্ণ শহরে নিঃসঙ্গ নির্লিপ্ত দোয়েল

পৃথিবীর অতলান্ত চোরাবালি মেপে

সুদীর্ঘ অক্রম প্রতীক্ষার পরে-

যদি মিলে যায় একমুঠো সোনারোদ্দুর!

রাজকুমারী

রাজকুমারী, তোমায় পড়ছে মনে।

যখন হেঁটেছিলাম সেই নীল লেকেরই পাড়ে,

যখন স্নিগ্ধ বাতাসে চুল ছিলো এলোমেলো,

আমি তোমায় দেখছিলেম বারে বারে।

রাজকুমারী, তোমায় অনেক মনে পড়ে।

বেলা যখন পড়ে যায় গগনে,

আমার চোখ জোড়া জেগে থেকেও চলে যায় স্বপনে।

মনে পড়ে সেই একটি বিকেল, একটি শীতের সন্ধ্যা।

হাসিখুশি যখন ছিলো নিত্য দিনের দাস,

বুঝতে পেরেছিলাম তুমি নিয়েছো মনে আমার বসবাস।

পথিক আমায় কেনো ভালবেসেছিলে?

বেসেছিলেই যখন তখন কেনো দূরে ঠেলে দিলে?

ভুলতে পারো কি সেই ছলছলে অশ্রুর বেলা?

নিয়তি কেনো করেছিলো মোদের নিয়ে খেলা।

আজ তুমি কোথায় আর আমি কোথায়?

শীতের সেই সন্ধ্যাতে আমি আসবো না আর,

তুমি আর পথ চেয়ে বসে থেকোনা।

কফির একটি কাপ রেখে দিও না।

তুমি একা একাই থেকো এই সন্ধ্যাতে,

আমি না হয় জেগে থাকবো রোজ প্রভাতে।

কি আর হবে এই নিশি জাগরণে?

মুছবে না তুমি কভু এই ব্যর্থ মনে।

আজ আর আমায় তুমি ডাকবে না?

রাত প্রহরের মাঝে কি তুমি স্বপ্নে আসবেনা?

কেন ছিল মোদের এতো ব্যবধান?

আমি কি আর শুনবো না তোমার সেই মিষ্টি সুরের কলতান?

রাজকুমারী, তোমায় ভীষণ মনে পড়ে…………….